ঈদের রাতের ফজিলত ও আমল, ঈদুল আজহার/আযহার রাতের আমল ও ফজিলত

ঈদ আমাদের মাঝে আনন্দের বারতা যেমন নিয়ে আসে, তেমনি নিয়ে আসে আল্লাহর নৈকট্যলাভের মহাসুযোগ। বিশেষত ঈদের রাতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ফজিলতমণ্ডিত। তাই ঈদের রাতে জেগে থাকা এবং ইবাদত করার গুরুত্ব, মাহাত্ম্য এবং ফজিলত বহু হাদিসেই বর্ণিত হয়েছে। সেসব হাদিসের আলোকেই তোলে ধরা হলো ঈদের রাতের ফজিলত ও আমল, ঈদুল আজহার/আযহার রাতের আমল ও ফজিলত।
ঈদের রাতের ফজিলত ও আমল, ঈদুল আজহার/আযহার রাতের আমল ও ফজিলত

ঈদের রাতের ফজিলত ও আমল, ঈদুল আজহার/আযহার রাতের আমল ও ফজিলত

ঈদের রাত ইবাদতের শ্রেষ্ঠ রাত। ঈদের রাতের আমল এবং ঐ রাত্রির দু'আ বিফল হয়না। ঈদের রাতের ইবাদত আল্লাহর কাছে খুব প্রিয় 

ঈদুল আযহার রাতের ফজিলত, ঈদের রাতের ইবাদতের ফজিলত, ঈদের আগের রাতের ফজিলত, ঈদের রাতে ইবাদতের ফজিলত

হজরত আবু উমামা [রাজিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু] হতে বর্ণিত, নবী করিম [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন, যে ব্যক্তি দুই ঈদের রাত জাগবে শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য। যেদিন [হাশরের দিন] সবার অন্তর মারা যাবে, সেদিন তার অন্তর মরবে না।

‘হজরত মুআজ ইবনে জাবাল [রাজিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু] হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন, যে ব্যক্তি পাঁচ রাত জেগে থাকবে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব। পাঁচটি রাত হলো—এক. জিলহজ মাসের আট তারিখের রাত। দুই. জিলহজের ৯ তারিখের রাত। তিন. ঈদুল আজহার রাত। চার. ঈদুল ফিতরের রাত। পাঁচ. ১৫ই শাবানের রাত।

‘হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর [রাজিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু] থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এমন পাঁচটি রাত আছে, যে রাতে কোনো দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয় না। রাতগুলো হলো—
  • জুমার রাত।
  • রজব মাসের প্রথম রাত।
  • শাবান মাসের ১৫ তারিখের রাত।
  • ঈদুল ফিতরের রাত।
  • ঈদুল আজহার রাত।
বর্ণিত হাদিসগুলোয় ঈদের রাতসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রাতগুলোর অন্যতম। উপরে বর্ণিত হাদিসগুলো ছাড়াও আরও অসংখ্য হাদিসে ঈদের রাতে ইবাদতের গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যে দিন মানুষের অন্তর মারা যাবে, সেদিন ঈদের রাতের ইবাদতকারীর অন্তর মরবে না। হাদিসের মর্মার্থ তো এই, কেয়ামতে ভয়াবহ তাণ্ডবের সময় প্রতিটি মানুষের অন্তর যখন হাশরের ময়দানে ভয় আশঙ্কা অস্থিরতায় মৃতপ্রায় হয়ে থাকবে। মানুষের হুশ-জ্ঞান বলতে থাকবে না কিছু। ঈদের রাতে আমলকারীর হৃদয় তখনও সজীব ও সতেজ থাকবে। সেদিন তার অন্তর মারা পড়বে না। বরং থাকবে সদা প্রফুল্ল।

ঈদের রাতের আরেকটি বড় প্রাপ্তি হলো, এ রাতে দোয়া কবুল করা হয়। কোনো দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয় না। বরং আল্লাহ তায়ালার দরবারে তা সরাসরি কবুল হয়। তাই আমরা

আমাদের ইবাদতের সঙ্গে সঙ্গে ঈদের রাতে আল্লাহ তায়ালার কাছে আমাদের প্রয়োজনগুলো চাইতে পারি। আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা কামনা, কবরের আজাব থেকে মুক্তি, জাহান্নামের আগুন থেকে রেহাই চেয়ে নিয়ে পরদিন সকালে একেবারে নিষ্পাপ মাসুম বাচ্ছার মতো পবিত্র ঈদের মাঠে আল্লাহর পুরস্কার গ্রহণ এবং প্রতিদান লাভের শ্রেষ্ঠ সুযোগ অন্য কোনো রাতে  আছে কি? নেই। সুতরাং এই দুনিয়ার যাবতীয় কল্যাণ লাভ এবং মঙ্গল কামনা করা সেই সঙ্গে কামনা করে জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের এই তো

মহাসুযোগ! ফটকা ফুটানো, আতশবাজি করা, হৈ- হুল্লোড় আর দাপাদাপিতে পার করে দেই আমাদের ঈদের রাত। অনেকে সারা রাত মার্কেটিং করে শেষ করি। কিন্তু একবারও আল্লাহর ইবাদতের কথা মনে করি না। একজন মুসলমানের এমনটি কখনও কাম্য হতে পারে না। আসুন! আমরা ফটকাবাজিতে কিংবা ঈদ- মার্কেটে নয় বরং সুন্দর, মার্জিত ও শালীন উল্লাসের সঙ্গে সঙ্গে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ইবাদত করে ঈদের রাতটা পার করি। ইয়া রাব্বাল আলামীন আমাদেরকে ঈদের রাতের ইবাদত এবং দু'আ করার তাউফিক দান কর আমীন!

ঈদের রাতের ফযীলত / ঈদের রাতের আমল ও ফজিলত, ঈদের রাতের ফযীলত, ঈদের রাতের ফযিলত

যে সন্ধ্যায় ঈদের চাঁদ দেখা যায় সে রাতকে ঈদের রাত বলা হয়। এ রাতের অনেক গুরুত্ব ও ফযীলতের কথা হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। কয়েকটি হাদীস নিম্নে তুলে ধরা হলো।

হযরত আবু উমামা (রা.) বর্ণনা করেন, নবী (স.) বলেন, যে ব্যক্তি দুই ঈদের রাতে আল্লাহর নিকট সাওয়াব প্রাপ্তির নিয়তে ইবাদত করবে তার হৃদয় সেদিনও জীবিত থাকবে যেদিন সকল হৃদয়ের মৃত্যু ঘটবে। (ইবন মাজাহ, হাদীস নম্বর ১৭৮২, আল মুজামুল আওসাত, হাদীস নম্বর-১৫৯)।

হযরত উবাদাতা ইবন সামিত (রা.) বলেন, যে ব্যক্তি ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহার রাতকে (ইবাদতের মাধ্যমে) জীবিত রাখবে তার দিল ঐ দিন মরবে না যেদিন অন্যদের দিল মরে যাবে। (আত তারগীব ওয়াত তারহীব, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা-৯৮, হাদীস নম্বর-১৬৫৭)।

হযরত মু‘আয ইবন জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (স.) বলেন, যে ব্যক্তি পাঁচটি রাত (ইবাদতের মাধ্যমে) জাগ্রত থাকবে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে। (এক). যিলহাজ্জ মাসের ৮ তারিখ রাত, (দুই). যিলহাজ্জ মাসের ৯ তারিখ রাত, (তিন). ঈদুল আযহার রাত, (চার). ঈদুল ফিতরের রাত এবং (পাঁচ). ১৫ শাবানের রাত। (আত তারগীব ওয়াত তারহীব, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা-৯৮, হাদীছ নম্বর-১৬৫৬)।

হযরত আউস আল আনসারী (রা.) বলেন, রাসুল (স.) বলেন, ঈদুল ফিতরের দিন সকালে সকল ফিরিশতা রাস্তায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে যান এবং মুসলমানদের উদ্দেশ্যে বলতে থাকেন, হে মুসলিমগণ! তোমরা দয়ালু প্রতিপালকের দিকে এগিয়ে আস। উত্তম প্রতিদান ও বিশাল সাওয়াব প্রাপ্তির জন্য এগিয়ে আস। তোমাদের রাত্রিবেলার নামাযের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তোমরা সে নির্দেশ মেনে নামায পড়েছ। তোমাদেরকে দিনগুলোতে রোজা রাখতে বলা হয়েছিল, তোমরা সে নির্দেশও পালন করেছ, এক মাস রোজা রেখেছ। গরীব দুঃখীরদের পানাহারের মাধ্যমে নিজ প্রতিপালককে তোমরা পানাহার করিয়েছ। এখন নামায পড়ার মাধ্যমে সেগুলোর প্রতিদান ও পুরস্কার গ্রহণ কর। ঈদের নামায পড়ার পর ফিরিশতাদের মাঝে একজন ঘোষণা দেন, শোন, নামায আদায়কারীরা! তোমাদেরকে মহান রাব্বুল আলামীন মাফ করে দিয়েছেন, সকল গুনাহ থেকে মুক্ত অবস্থায় নিজ নিজ আবাসে ফিরে যাও। আর শোন! এ দিনটি হচ্ছে পুরস্কার প্রদানের দিন। আকাশে এ দিনের নামকরণ করা হয়েছে ‘পুরস্কারের দিন’ (আল মুজামুল কাবীর লিত তাবারানী, হাদীস নম্বর-৬১৭ ও ৬১৮)।
Tag: ঈদুল আযহার রাতের আমল, ঈদুল আযহার রাতের ফজিলত, ঈদের রাতের ইবাদতের ফজিলত, ঈদের আগের রাতের ফজিলত, ঈদের রাতে ইবাদতের ফজিলত, ঈদের আগের রাতে ইবাদতের ফজিলত, ঈদের রাতের আমল ও ফজিলত, ঈদের রাতের ফযীলত, ঈদের রাতের ফযিলত
Next Post Previous Post