ইহরাম অবস্থায় কোন কাজটি হারাম, মুহরিমের জন্য নিষিদ্ধ কাজ সমূহ | ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজ
আসসালামু আলাইকুম! সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আল্লাহর রহমতে ভাল আছেন। হজের অন্যতম ফরজ হলো ইহরাম বাঁধা। সুতরাং ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজ, ইহরাম অবস্থায় যেসব কাজ করতে পারবেন এবং ইহরাম অবস্থায় যেসব কাজ করতে পারবেন না। সুতরাং ইহরাম অবস্থায় কোন কাজটি হারাম সে সম্পর্কে আজকে আমরা আপনাকে জানাবো। ইনশাআল্লাহ। দয়া করে পুরো পোস্ট পড়ার অনুরোধ রইলো।
ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজ | ইহরাম অবস্থায় কোন কাজটি হারাম, মুহরিমের জন্য নিষিদ্ধ কাজ সমূহ
ইহরাম বাঁধার পর দু’টি কাজ
১.বেশি বেশি তালবিয়া পড়া।
২. ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজসমূহ থেকে বেঁচে থাকা।
ইহরাম বাঁধার পর হতে ইহরাম খোলা পর্যন্ত নিম্নে বর্ণিত কাজ গুলো নিষিদ্ধ এ ব্যাপারে খুবই সতর্ক থাকতে হবে।
ইহরাম অবস্থায় যে সব বিষয় থেকে বেঁচে থাকা উচিৎ বা প্রয়োজন
ইহরাম অবস্থায় যে সব কাজ করা যায়
* ইহরাম অবস্থায় মাথা ও মুখ ব্যতীত সম্পূর্ণ শরীর কাঁথা, কম্বল, চাদর ইত্যাদি দিয়ে ঢাকা। মাথা ও গাল বালিশে রেখে শোয়া। তবে সম্পূর্ণ চেহারা বালিশে রেখে উপুড় হয়ে শোয়া যাবে না। (মানাসিক পৃ.১২৩)* ইহরাম অবস্থায় ইহরামের কাপড় ময়লা বা নাপাক না হলেও পরিবর্তন করা। অনেকে মনে করে ইহরামের চাদর খুললেই ইহরাম খুলে যায়। একথা ঠিক নয়। হলক বা তাকসীর তথা চুল মুন্ডানো বা ছোট করার আগ পর্যন্ত ইহরাম খুলবে না। (মানাসিক পৃ.৯৮)
* ইহরামের কাপড় ছিঁড়ে গেলে সেলাই করে পরা। (মানাসিক পৃ. ৯৮)
* সুগন্ধিযুক্ত সাবান ব্যবহার না করে গোসল করা । তবে ইচ্ছাকৃত শরীরের ময়লা উঠানো যাবে না। (মানাসিক পৃ. ১২০)
* সুঘ্রাণযুক্ত ফল-মুল খাওয়া যাবে। তবে ইচ্ছাকৃত ফল বা ফুলের ঘ্রাণ নিবে না। (মানাসিক পৃ. ১২১,১২৪)
* ঘ্রাণমুক্ত লিপজেল, ভ্যাসলিন ঠেকাবশত ব্যবহার করা। (কিতাবুল মাসাইল ৩/১৬২)
* সেলাইযুক্ত বেল্ট, ব্যাগ ইত্যাদি ব্যবহার করা। (মানাসিক পৃ.১২২)
* মাথা ও চেহারা না ঢাকার শর্তে কান ঢাকা। (বর্তমানে কান ঢাকার জন্য ইয়ারফোন আকৃতির যে বস্তু পাওয়া যাচ্ছে তা ইহরাম অবস্থায় ব্যবহার করা যাবে।) (কিতাবুল মাসাইল ৩/১৩৮)
* ইহরাম অবস্থায় গৃহপালিত পশু যেমন : হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল ইত্যাদি জবাই করা এবং মাছ শিকার করা। (মানাসিক পৃ.১১৯)
* ইহরাম অবস্থায় মশা-মাছি, সাপ-বিচ্ছু, পিঁপড়া,
পোকা-মাকড়, হিংস্র জানোয়ার মারা। পিঁপড়া কষ্টদায়ক না হলে মারা যাবে না। (মানাসিক পৃ ১২৫, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৫২)
* দাঁত উঠানো। ফোঁড়া, বিচি ইত্যাদি গালা, ভাঙ্গা নখ কেটে ফেলা, ব্রাশ করাও যাবে তবে সুগন্ধি পেস্ট ব্যাবহার করা যাবে না। (মানাসিক পৃ.১২২)
* ইহরাম অবস্থায় চশমা, ঘড়ি, আংটি, মাফলার ব্যবহার করতে কোনো অসুবিধা নেই। (আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৮৯)
আরো দেখুন: হজের মাসআলা প্রব-১
মহিলাদের বিশেষ কিছু মাসাইল
* মহিলারা পায়ের পাতা ঢেকে ফেলে, এমন জুতা, হাত ও পায়ের মোজা, জাঙ্গিয়া- পেন্টি ইত্যাদি পরতে পারবে। মানাসিক পৃ. ১১৫* মাসিক বা সন্তান প্রসবোত্তর স্রাব চলাকালীনও ইহরাম বাঁধতে পারবে। তাওয়াফ, নামায, কুরআন তিলাওয়াত ও মসজিদে প্রবেশ ব্যতীত ঐ অবস্থায় হজ্বের অন্যান্য সব কাজই করতে পারবে। মানাসিক পৃ.৯০
* স্বর্ণ ও অন্যান্য অলংকার পরতে পারবে। তবে ইহরাম অবস্থায় অলংকার না পরাই ভালো। মানাসিক পৃ.১১৬
* ইহরাম অবস্থায় চুলে তেল দেওয়া, সিঁথি করা নিষেধ। চুল বেঁধে রাখতে পারবে। তবে চুল না আঁচড়ানোর কারণে যদি খুব বেশি সমস্যা হয়, চুলে জট লেগে যাওয়ার উপক্রম হয়, তাহলে সাজসজ্জার নিয়ত ছাড়া প্রয়োজন অনুযায়ী বড় দাঁতের চিরুনি দ্বারা চুল আঁচড়ানো যাবে। মানাসিক পৃ.১২৪, গুনইয়াতুন নাসিক পৃ. ৮৯-৯০
* কালো বোরকা ব্যবহার করতে পারবে। অনেকে সাদা বোরকা ব্যবহার জরুরী মনে করে। এধারণা মোটেও ঠিক নয়। মানাসিক পৃ.১১৫
* মেহেদি, লিপস্টিক ঘ্রাণমুক্ত হলেও ব্যবহার করা যাবে না। গুনইয়াতুন নাসিক পৃ.৯০
*মক্কায় অবস্থানকালে মহিলারা হজ্বের ইহরাম বাসাতেই বাঁধবে। মহিলাদের ইহরামের জন্য মসজিদে হারামে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। মানাসিক পৃ. ১১৫
*চুল ধোয়ার জন্য সুগন্ধি শ্যাম্পু ব্যাবহার করা যাবে না। বর্তমান বাজারের সব শ্যাম্পুই সুগন্ধিযুক্ত তাই ইহরাম অবস্থায় শ্যাম্পু ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। কিতাবুল মাসাইল ৩/১৬৩
Tag: ইহরাম অবস্থায় কোন কাজটি হারাম, মুহরিমের জন্য নিষিদ্ধ কাজ সমূহ, ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজ