ইহরাম অবস্থায় মৃত্যু

আসসালামু আলাইকুম! সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আল্লাহর রহমতে ভাল আছেন। হজ্ব শুরু করার জন্য সর্ব প্রথম ধাপ হলো ইহরাম বাঁধা। অতএব আমাদের সকলের জানা উচিত, ইহরাম বাঁধার মূল লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য কি? ইহরামের  উপকারিতা কি? ইহরাম অবস্থায় মৃত্যু /এহরাম অবস্থায় মৃত্যু হলে আমাদের করণীয় কি? আজকে আমরা উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানব। সুতরাং দয়া করে পুরো পোস্টটি পড়ার অনুরোধ রইল। ধন্যবাদ
ইহরাম বাঁধার মূল লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য কি? ইহরামের  উপকারিতা কি? ইহরাম অবস্থায় মৃত্যু /এহরাম অবস্থায় মৃত্যু হলে আমাদের করণীয় কি

ইহরামের কাপড়ের উপকারিতা বা গুরুত্ব

১. ইহরামের কাপড়ের প্রথম ফায়দা হল এ কাপড় পরে বাহ্যিকভাবে নিজেকে আল্লাহ তা'আলার পাগল প্রমাণ করা যায়।

২. দ্বিতীয় ফায়দা হল, আমরা বাড়ি-গাড়ি, ধন-সম্পদকে নিজের সম্পদ মনে করি। মনে করি এ সবই আমার। অথচ বাস্তবে এই সম্পদের সামান্যই আমার। বাকি সবই বিবি বাচ্চার। আমি শুধু দুটি চাদরের মালিক। কারণ শেষ পর্যন্ত দু'টি চাদরই আমার সাথে যাবে। আর যা কিছু আমার বলে দাবি করছি তার কিছুই আমার সাথে যাবে না। মানুষ যখন মৃত্যু শয্যায় শায়িত হয়, তখনই তার সম্পদের দুই তৃতীয়াংশ।হাত ছাড়া হয়ে যায়। তখন কোনো দান সদকার ওসীয়ত করলে তা শুধু এক তৃতীয়াংশের মধ্যেই কার্যকর হয়। আর মৃত্যুর পর তো এই এক ভাগও শেষ হয়ে যায়। তাহলে কেন আমরা ধন-সম্পদ অর্জনের জন্য জীবন শেষ করে ফেলি?

ইহরামের কাপড়

ইহরামের কাপড়ের মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে এই শিক্ষা দিচ্ছেন যে, তোমার সম্পদ পাহাড়সম হলেও দু'টি চাদরই তোমার শেষ সম্বল হবে। তাই কবরে সাথে নেয়ার জন্য আসল সম্পদের জোগাড় কর। আর এই সাদা চাদর পরা যেন মৃত্যুর সাজে সজ্জিত হওয়া। তাই মৃত্যুর জন্য এখনই প্রস্তুত হও। অচিরেই একদিন সাদা চাদর পরিয়ে তোমার আত্মীয় স্বজন তোমাকে অন্ধকার কবরে রেখে আসবে। আরো পড়ুন: ইহরাম শব্দের অর্থ কি

ইহরাম বাঁধার হজ্বে পর যেতে না পরলে করণীয়

হজ্ব বা উমরার ইহরাম বাঁধার পর যেকোনো কারণবশত মক্কায় যেতে না পারলে ইহরাম অবস্থায় থাকবে এবং ইহরাম অবস্থার নিষেধাজ্ঞাসমূহও মেনে চলবে। অতঃপর যখন যাওয়া সম্ভব হয় তখন গিয়ে হজ্ব বা উমরা আদায় করে ইহরাম থেকে মুক্ত হবে।

কিন্তু দীর্ঘ সময় ইহরাম অবস্থায় থাকা যদি কষ্টকর হয়, তাহলে কারো মাধ্যমে মক্কায় হারামের সীমানার ভিতর উমরা ও ইফরাদ হজ্বের ইহরাম থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য একটি বকরী বা।দুম্বা জবাই করাবে। আর কিরান হজ্বের ইহরাম থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য দুইটি বকরী বা দুম্বা জবাই করাতে হবে। বকরী বা দুম্বা জবাই হওয়ার পরই হালাল হয়ে যাবে তথা ইহরামমুক্ত হয়ে যাবে। তবে জবাই এর পর হলক বা তাকসীর তথা চুল মুন্ডানো বা ছোট করে নেওয়া উত্তম। অতঃপর যে ব্যক্তি উমরার ইহরাম থেকে হালাল হবে সে পরবর্তীতে একটি উমরা কাযা করে নিবে। আর ইফরাদ হজ্বের ইহরাম থেকে হালাল হলে একটি উমরা ও একটি হজ্ব কাযা করতে হবে। কিরান।হজ্বে ইহরাম থেকে হালাল হলে, দুইটি উমরা ও একটি হজ্ব করতে হবে। তবে যদি ঐ বছরই হজ্ব করা সম্ভব হয়, তাহলে অতিরিক্ত উমরাটি করতে হবে না। (মানাসিকে মোল্লা আলী কারী পৃ.৪১৭-২৭) আরো পড়ুন: ইহরাম অবস্থায় যেসব কাজ নিষিদ্ধ ইহরাম অবস্থায় যেসব কাজ নিষিদ্ধ 

ইহরাম অবস্থায় মৃত্যু - ইহরাম অবস্থায় মৃত্যু হলে করণীয়

কেউ যদি ইহরাম অবস্থায় মৃত্যু বরণ করে তাহলে তাকে সাধারণ মাইয়্যেতের মতোই গোসল করাতে হবে এবং কাফন-দাফন করতে হবে। তার চেহারাও ঢাকা যাবে এবং আতর ও কপূরও ব্যবহার করা যাবে। রদ্দুল মুহতার ২/৪৮৮

★ যে বছর হজ্ব ফরয হয়েছিল সেই বছর ইহরাম অবস্থায় মারা গেলে ঐ ব্যক্তির ওয়ারিশদের জন্য ঐ হজ্বের বদলী করানো জরুরী নয়। আর যদি ঐ বছর ইহরাম না বেঁধে থাকে বরং পরবর্তী কোনো বছর ইহরাম বেঁধে থাকে এবং উকূফে আরাফার আগে মারা যায় তাহলে তার পক্ষ থেকে তার দেশ থেকে বদলী হজ্ব করানো জরুরী। আর উকুফে আরাফার পরে মারা গেলে বদলী হজ্ব করাতে হবে না। আহসানুল ফাতাওয়া ৪/৫২২ 

Tag:ইহরাম বাঁধার মূল লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য কি? ইহরামের  উপকারিতা কি? ইহরাম অবস্থায় মৃত্যু /এহরাম অবস্থায় মৃত্যু হলে আমাদের করণীয় কি
Next Post Previous Post