হজ্জ করার পদ্ধতি, হজ্জ করার নিয়ম- হজ করার নিয়ম, হজ্জের নিয়ম -হজ্বের নিয়ম | hajj korar niom-hajj korar niom 2022
আসসালামু আলাইকুম রাহমাতুল্লাহ! কেমন আছেন? আশা করি, আল্লাহর রহমতে ভাল আছেন। আপনারা অনেকেই জানতে চান, কিভাবে হজ করে অথবা হজ করার পদ্ধতি বা নিয়ম। আবার অনেকে সার্চ করেন, হজ্জের নিয়ম বা পদ্ধতি। হজ আল্লাহ তায়ালার একটি বিশেষ নেয়ামত। যা শুধু উম্মতে মুহাম্মদীকে ফরজ করে দিয়েছেন। তাই চলুন আজকে আমরা জানবো হজ করার নিয়ম বা পদ্ধতি হজ কিভাবে করে হজ্জের নিয়ম বা পদ্ধতি।
হজ্জ করার পদ্ধতি, হজ্জ করার নিয়ম- হজ করার নিয়ম, হজ্জের নিয়ম -হজ্বের নিয়ম | hajj korar niom-hajj korar niom 2022
পবিত্র হজ্ব ইসলামের অন্যতম ফরজ বিধান। প্রত্যেক সামর্থবান মুসলমানের জন্য যা অবশ্যই পালনীয় কর্তব্য। এতে শৈথিল্য বা কার্পণ্য করার কোনাে অবকাশ নেই। ইতােমধ্যে আমাদের দেশ থেকে হজ্ব পালনকারীরা হজ্বের নিয়তে পবিত্র মক্কা মােয়াজ্জমায় যাত্রা শুরু করেছেন। পবিত্র হজ্ব খাঁটি সহি শুদ্ধভাবে পালনের ক্ষেত্রে শরিয়তের অতীব প্রয়ােজনীয় মাসলা-মাসায়েল অর্থাৎ বিধিবিধান রয়েছে যা হয়তাে হজ্ব পালনকারীদের জন্য কিছুটা সহায়ক হতে পারে। পবিত্র হজ্ব ফরজ হওয়ার প্রাথমিক শর্ত হিসেবে জ্ঞানসম্পন্ন বালেগ, সুস্থ সবল ও স্বাধীন হওয়া বাহঞ্ছনীয় এবং পরিবার-পরিজনের ভরণ-পােষণের যাবতীয় সাংসারিক খরচের পরিমাণ এমন হতে হবে, যে হজ্ব পালন শেষে বাড়ি গমন পর্যন্ত পরিবারবর্গ স্বাচ্ছন্দ্যে চলতে পারে। এর সাথে যাতায়াত, নিরাপদ থাকা, হজ্বের। প্রয়ােজনীয় সম্বল থাকা এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে মােহরেম। লােক সাথে থাকার নিশ্চয়তা।
সাধারণত বাংলাদেশের মানুষ তমাতু হজ্ব করে থাকেন। তাতু হজ্বের সর্বপ্রথম কাজ উমরাহর জন্য ইহরাম যা ফরজ গােসল অথবা অজু সেরে মিকাত অতিক্রম করার আগেই সেলাইবিহীন একটি চাদর পরুন, অপর একটি চাদর গায়ে জড়িয়ে নিন। এরপর অবস্থানুযায়ী দু'রাকাত নামাজ পড়ুন। এবার ইহরামের নিয়ত করুন এবং আওয়াজ করে অন্তত একবার (তিনবার হলে ভালাে) তালবিয়া পাঠ করুন।
হজ্বের প্রস্তুতি বা নিয়ম
৮ জিলহজ্ব থেকে হজ্বের অনুষ্ঠান শুরুর জন্য অপেক্ষা করবেন। সাথে সাথে ইবাদত-বন্দেগিতে লিপ্ত থেকে সুষ্ঠু ও নির্ভুল হজ সম্পাদন করার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া প্রার্থনা করতে থাকবেন।
হজ্বের দিনগুলােতে আপনার করণীয়
হজ্বের মূল দিবসগুলাে হচ্ছে ৮ জিলহজ্ব থেকে ১৩ জিলহজ্ব পর্যন্ত ।
হজ্বের ইহরাম (ফরজ) :
৮ জিলহজ্ব তারিখে হজ্বের নিয়াত করে ইহরাম বেঁধে সূর্যোদয়ের পর মিনা অভিমুখে রওনা হবেন তালবিয়াহ পাঠ করতে করতে।
মিনায় অবস্থান (সুন্নাত) :
৮ জিলহজ্ব জোহরের আগে মিনায় পৌছে জোহরের নামাজ পড়বেন। অতঃপর আসর, মাগরিব ও এশা এবং ৯ জিলহজ্ব ফজর নামাজ আদায় করবেন। মিনাতে অবস্থানকালে বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত, জিকির-আজকার এবং মুসলিম উম্মাহর জন্য আল্লাহর কাছে রহমত কামনা করবেন।
উকুফে আরাফা (ফরজ) :
৯ জিলহজ্ব মিনা থেকে ফজরের নামাজ আদায় করে সূর্যোদয়ের পর তালবিয়া পাঠ করতে করতে আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের জন্য রওনা হবেন। রাসূল সা: বলেছেন, আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করাই হচ্ছে হজ্ব।' আরাফাতের ময়দানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান অবশ্যই করবেন। জোহর ও আসরের। নামাজ- জোহরের প্রথম ওয়াক্তে এক আজান ও দুই ইকামাতে কসর করে একত্রে পড়তে হয়। সেখানে অবস্থানের সময় বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে অবস্থান সঠিক হয়। কারণ আরাফাত সংলগ্ন ‘উরানা উপত্যকা’ অবস্থিত। সেখানে মসজিদে নামিরা’ অবস্থিত । হাজীদের ভুল করে ওই উপত্যকায় অবস্থান করতে দেখা যায়। তা সঠিক নয়। যা হােক সূর্যাস্তের পর মুজদালিফায় রাতযাপনের জন্য রওনা হবেন।
মুজদালিফায় অবস্থান :
সূর্যাস্তের পর আরাফা বা রাস্তায় কোথাও মাগরিবের নামাজ না পড়ে সােজা মুজদালিফার উদ্দেশ্যে চলতে থাকুন। মুজদালিফায় পৌছে এক আজানে ও দুই ইকামতে দু’ওয়াক্ত নামাজ কসর আদায় করবেন (কসর মাগরিবের হবে না, শুধু এশার হবে)। মুজদালিফায় অবস্থানকালে জামারাতে কঙ্কর নিক্ষেপের জন্য ক্ষুদ্রাকারের ৪৯ বা ৭০টি কঙ্কর সংগ্রহ করবেন। ফজরের নামাজ আদায় করে প্রত্যুষে আকাশ ফর্সা হতে থাকলে মিনার দিকে রওনা হবেন।
কঙ্কর নিক্ষেপ (ওয়াজিব) :
১০ জিলহজ্ব বড় জামারাতে (শয়তানকে) সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন সূর্য। পশ্চিম দিকে ঢলে পড়ার পূর্ব পর্যন্ত। কঙ্কর নিক্ষেপ করা ওয়াজিব এবং নিক্ষেপের সময় তাকবির বলবেন। নিক্ষেপ করার সময় শুধুমাত্র স্তম্ভের গায়ে নয়, কঙ্কর বৃত্তের মধ্যে পড়লেও হবে। সতর্কতার সাথেও কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন কারণ ওই সময় প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে।
কোরবানি করা (ওয়াজিব) :
১০ জিলহজ্ব কঙ্কর নিক্ষেপ শেষে, কোরবানি করবেন। অতঃপর মাথা মুণ্ডন করে অথবা চুল ছেটে গােসল সেরে ইহরামের কাপড় খুলে স্বাভাবিক কাপড় পরবেন। খেয়াল রাখতে হবে যেন কঙ্কর মারা, ফুলছাটা বা মাথা মুণ্ডন করা এবং কোরবানি করার মধ্যে ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়। তা না হলে দম বা কাফফারা দিয়ে হজ্ব শুদ্ধ করে নিতে হবে।
তাওয়াফে জিয়ারত (ফরজ) :
১০ জিলহজ্ব কঙ্কর মারা শেষে তাওয়াফে ফিয়ারতের উদ্দেশ্যে মিনা থেকে ‘খানায়ে কাবা’ যেতে হবে। ওই দিন সূর্যাস্তের আগেই তাওয়াফে জিয়ারতের কাজ সারতে হবে। তা না হলে ১২ জিলহজ্ব তারিখের পরে তাওয়াফ করে দম দিতে হবে। অবশ্য মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক কারণে না করতে পারলে পবিত্র হওয়ার পর তা সমাধা করবেন।
কঙ্কর নিক্ষেপ (ওয়াজিব) :
১১ জিলহজ্ব দুপুরের পর (সূর্য পশ্চিম দিকে ঢলে পড়লে) প্রথমে ছােট জামারায়, তারপর মধ্যম জামারায় এবং বড় জামারায় সাতটি করে মােট ২১টি কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন। ১২ জিলহজ্ব আগের দিনের মতােই করবেন। জামারাতে কঙ্কর নিক্ষেপের ক্ষেত্রে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য একই বিধান। তবে মহিলাদের রাতে কঙ্কর নিক্ষেপ করা জায়েজ। নিজ হাতে কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন। বিনা ওজরে অন্য কারাে মাধ্যমে কঙ্কর নিক্ষেপ করা জায়েজ নয়।
কোরবানি :
কিরান হজ্ব ও তামাত্তু হজ্ব পালনকারীদের ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। হজ্বকারী আল্লাহর সন্তুষ্টি ও কোরবানির উদ্দেশ্যে উট, দুম্বা, ভেড়া ও ছাগল যেকোনাে একটি বা একাধিক পশু জবাই করে যে রক্ত প্রবাহ করেন তাকে দম বলে। অবশ্য সৌদি কর্তৃপক্ষ
যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে অনুমােদিত ব্যাংকের বুথ স্থাপন করেছে। সেখানে টাকা জমা দিয়ে কুপন সংগ্রহ করলেই।দম বা কোরবানির ব্যবস্থা হয়ে যায়। সর্বশেষে বিদায়ী তাওয়াফ করে মক্কা শরীফ থেকে বিদায় নেবেন। যারা মদিনাতে যাননি, তারা মসজিদে নববী জিয়ারতের উদ্দেশ্যে মদিনা যাবেন।
মিনা ত্যাগ :
মিনায় থাকতে না চাইলে ১২ জিলহজ্ব সন্ধ্যার আগে বা পরে মিনা ত্যাগ করুন। সূর্যাস্তের আগে মিনা ত্যাগ করা ভালাে।
বিদায়ী তাওয়াফ (ওয়াজিব) :
মক্কা শরীফ।থেকে বিদায়ের আগে বিদায়ী তাওয়াফ (ওয়াজিব) করুন।।এতে ইজতেবা, রমল, সায়ি নেই। মাকামে ইবরাহিমে দু'রাকাত নামাজ পড়ে মুলতাজাম, কাবার দরজা ও হাতিমে দোয়া করুন। জমজমের পানি পান করেও দোয়া করুন।।তাওয়াফে জিয়ারতের পর কোনাে নফল তাওয়াফ করে থাকলেও বিদায়ী তাওয়াফের ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। মহিলারা শারীরিক কারণে বিদায়ী তওয়াফ করতে না পারলে কোনাে অসুবিধা নেই, এ জন্য কোনাে দম বা কাফফারাও নেই।
Tag: হজ্জ করার পদ্ধতি, হজ্জ করার নিয়ম- হজ করার নিয়ম, হজ্জের নিয়ম -হজ্বের নিয়ম, hajj korar niom-hajj korar niom 2022