ফরজ নামাজের পর মুনাজাত | নামাজের মুনাজাত | মোনাজাত ও দোয়া | namajer por munajat
ফরজ নামাজের পর মুনাজাত | নামাজের মুনাজাত | মোনাজাত ও দোয়া | namajer por munajat
মুনাজাত / দোয়া-১
রাব্বানা তাকাব্বাল মিন্না ইন্নাকা আন্তাস সামিউল আলীম
সূরা আল-বাক্বারাহ, আয়াতঃ ১২৭
رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنْتَ السَّمِيعُ العَلِيمُ
মোনাজাতের অর্থ
"হে আল্লাহ! আমাদের এই কাজটি কবুল করুণ। নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা এবং সর্বজ্ঞ।"
ফযিলত
১। কাবা শরীফের নির্মাণ কাজ শেষ করার পর হযরত ইবরাহীম (আঃ) এবং ইসমাইল (আঃ) এই দোয়াটি পড়েছিলেন।
২। এই দোয়ার মাধ্যমে হযরত ইবরাহীম (আঃ) এই শিক্ষাই দিয়েছিলেন যে মানুষের শুধু কোন মহৎ কাজ শেষ করেই তৃপ্ত না হয়ে কিংবা গর্ব না করে, বরং ঐ কাজটি কবুলের জন্যে আল্লাহ্র কাছে দোয়া করতে হবে।
মুনাজাত / দোয়া-২
রাব্বানা ওয়ায-আলনা মুসলিমাইনা লাকা ওয়া মিন জুররিয়াতিনা উম্মাতান মুসলিমাতাল লাকা ওয়া আরিনা মানাসিকানা ওয়া তুব আলাইনা ইন্নাকা আন্তাত-তাউয়াবুর-রাহীম
সূরা আল-বাক্বারাহ, আয়াতঃ ১২৮
رَبَّنَا وَاجْعَلْنَا مُسْلِمَيْنِ لَكَ وَمِن ذُرِّيَّتِنَا أُمَّةً مُّسْلِمَةً لَّكَ وَأَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَتُبْ عَلَيْنَآ إِنَّكَ أَنتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
মোনাজাতের অর্থ
"হে আল্লাহ! আমাদেরকে আপনার উপর আজ্ঞাবহ করুণ এবং আমাদের বংশধর থেকেও একটি অনুগত জাতি সৃষ্টি করুণ, আমাদেরকে সঠিকভাবে ইবাদত করার পথ বলে দিন। আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয়ই আপনিই একমাত্র তওবা কবুলকারী! পরমদয়ালু!"
ফযিলত
১। এই দোয়াটি হযরত ইবরাহীম (আঃ) নিয়মিত করতেন।
২। হযরত ইবরাহীম (আঃ) কোন কাজ শেষ করার পর আল্লাহ্র প্রতি ভয় এবং স্বীকৃতি সরূপ এই দোয়াটি করতেন। আল্লাহ্র উপর বশ্যতা এবং আনুগত্যের প্রকাশ হিসেবে সবারই এই দোয়াটি করা উচিৎ।
এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তির মধ্যে আল্লাহ্র উপর স্বীকৃতি যত বাড়বে, আল্লাহকে অনুধাবনের পরিমানও বাড়তে থাকবে।
৩। ইবরাহীম (আঃ) তাঁর বংশধরদের আধ্যাত্মিক কল্যাণ এর জন্যেও এই দোয়া করতেন বিশেষ করে তাদের আখিরাতের কল্যানের জন্যে।
৪। এই দোয়াটি করার অন্য আরেকটি কারণও আছে। তাঁর বংশধরগন ভাল কাজ করে যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যে উদাহরন হিসেবে রাখতে পারে এবং তা পরবর্তীতে সমগ্র মুসলমান জাতির জন্যে কল্যান বয়ে আনবে।
মুনাজাত / দোয়া-৩
রাব্বানা আতিনা ফিদ-দু-নিয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়াকিনা আযাবান-নার
সূরা আল-বাক্বারাহ, আয়াতঃ ২০১
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
মোনাজাতের অর্থ
"হে রাব্বুল আলামিন! আমাদেরকে দুনিয়া এবং আখিরাতে কল্যান দান করুন। এবং জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করুন!"
ফযিলত
১। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নিয়মিত এই দোয়াটি পাঠ করতেন।
২। হজ্জের তাওয়াফের সময় এই দোয়াটি করা মাসনুন।
৩। আব্দুল্লাহ বিন সাইয়িব বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) রুকন জামাহ এবং রুকন আসওয়াদ এর মাঝে এই দোয়াটি করতেন। (আবু দাউদ)
৪। আবু হাসান বিন দাহহাক(রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ যদি ১০০ টি দোয়া করতেন তিনি শুরু এবং শেষ করতেন এই দোয়াটি দিয়ে। এমনকি দুটি দোয়া করলে তার মধ্যে একটি এই দোয়া।
৫। আল্লামা বাগাবি হতে বর্ণিত, একবার রাসুলুল্লাহ খুব দুর্বল ও পাতলা গড়নের (সদ্য ডিম থেক ফোটা বাচ্চার মত) এক লোককে দেখে তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, 'তুমি কি আল্লাহ্র কাছে কোন দোয়া কর'?
উত্তরে লোকটি বললেন, আমি আল্লাহ্র কাছে এই দোয়া করি যে আল্লাহ্ যেন আমাকে আখিরাতের শাস্তি এই দুনিয়াতে দিয়ে দেয়। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আশ্চর্যের সাথে বললেন, 'কিন্তু তোমার দুনিয়াতে সেই শাস্তি সহ্য করার সামর্থ্য নেই। বরং তুমি আল্লাহ্র কাছে এই দোয়াটি করো। সুবহানাল্লাহ। লোকটি দোয়াটি করলেন এবং সুস্থ হয়ে উঠলেন। (সহিহ মুসলিম)।
মুনাজাত / দোয়া-৪
রাব্বানা আফরিঘ আলাইনা সাব-রান ওয়া থাব্বিত আকদামানা ওয়ানসুরনা আলাল-কাউমিল-কাফিরিন
সূরা আল-বাক্বারাহ, আয়াতঃ ২৫০
رَبَّنَا أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْراً وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانصُرْنَا عَلَى القَوْمِ الكَافِرِينَ
মোনাজাতের অর্থ
"হে আল্লাহ! আমাদের ধৈর্য শক্তি বাড়িয়ে দাও, এবং আমাদেরকে দৃঢ়পদ কর এবং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে জয়ী করে তোল।"
ফযিলত
সাহাবীগণ যুদ্ধে থাকা অবস্থায় জালুতের সাথে এই দোয়া পড়তেন। প্রতিপক্ষ সৈন্যদের আক্রমনের স্বীকার হলেও এই দোয়া পড়তেন।
মুনাজাত / দোয়া-৫
রাব্বানা লা তু-আখিধনা ইন-নাসিনা আউ আখতাও-না
সূরা আল-বাক্বারাহ, আয়াতঃ ২৮৬
رَبَّنَا لاَ تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا
মোনাজাতের অর্থ
"হে দয়াময়! আমরা যদি কোন কারনে ভুলে যাই কিংবা ভুল করি আমাদের শাস্তি দিওনা।"
ফযিলত
১। সূরা আল-বাকারার অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ শেষ দুই আয়াত এর প্রথম আয়াত।
২। আল্লাহ্র রাসুল আল্লাহ্ পক্ষ থেকে তাঁর কাছে যা পাঠানো হয়েছে তাতে বিশ্বাস করতেন এবং মুমিনগণও তাই করতেন। সকল মুমিনই আল্লাহ্, আল্লাহ্র রাসুল, ফেরেসেতা, আসমানি কিতাব এবং প্রেরিত রাসুলদেরকে বিশ্বাস করতেন।
তাঁরা বলেন, আল্লাহ্র প্রেরিত রাসুলদের মধে আমরা কোন ভেদাভেদ করিনা। আমরা শুনি এবং সেই অনুযায়ী কাজ করি।
111
মুনাজাত / দোয়া-৬
রাব্বানা ওয়ালা তাহ-মিল আলাইনা ইসরান কামা হামাল-তাহু আলাল-লাযীনা মিন কাবলিনা
সূরা আল-বাক্বারাহ, আয়াতঃ ২৮৬
رَبَّنَا وَلاَ تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا
মোনাজাতের অর্থ
"হে আল্লাহ! আমাদের উপর এমন গুরু দায়িত্ব চাপিয়ে দিওনা, যেমনটি আমাদের পূর্বগণের উপরে দিয়েছ।"
ফযিলত
১। সূরা আল-বাকারার অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ শেষ দুই আয়াত এর দ্বিতীয় আয়াত।
২। আল্লাহ্র রাসুল আল্লাহ্ পক্ষ থেকে তাঁর কাছে যা পাঠানো হয়েছে তাতে বিশ্বাস করতেন এবং মুমিনগণও তাই করতেন। সকল মুমিনই আল্লাহ্, আল্লাহ্র রাসুল, ফেরেসেতা, আসমানি কিতাব এবং প্রেরিত রাসুলদেরকে বিশ্বাস করতেন।
তাঁরা বলেন, আল্লাহ্র প্রেরিত রাসুলদের মধে আমরা কোন ভেদাভেদ করিনা। আমরা শুনি এবং সেই অনুযায়ী কাজ করি। এ জন্যেই আমরা যদি এসব কোন বিষয়ে ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তাঁর জন্যে আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চেয়ে দোয়া করতে হবে।
মুনাজাত / দোয়া-৭
রাব্বানা ওয়ালা তুহাম্মিলনা মা লা তাকাতা লানা বিহি ওয়া-ফু আন্না ওয়াঘফির লানা ওয়াইরহামনা আন্তা মাওলানা ফানসুরনা আলাল-কওমিল কাফিরীন
সূরা আল-বাক্বারাহ, আয়াতঃ ২৮৬
رَبَّنَا وَلاَ تُحَمِّلْنَا مَا لاَ طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنتَ مَوْلاَنَا فَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
মোনাজাতের অর্থ
"হে রাব্বুল আলামিন! আমাদের উপর এমন গুরু দায়িত্ব চাপিয়ে দিওনা যার ভার আমরা সইতে পারবনা। আমাদেরকে মাফ করুন এবং আমাদের ক্ষমা কবুল করুন। আমাদেরকে দয়া করুন। তুমিই আমাদের প্রভু এবং আমাদেরকে কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে জয়ী করে তোল।"
ফযিলত
১। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এই দোয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ) করেছেন এবং তা কবুল হয়েছে। (তাফসীর মাযহারি)।
২। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, একদা আমরা জিবরাঈল (আঃ) সহ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সাথে বসেছিলাম। হঠাৎ একটা দরজা খোলার শব্দ শুনতে ফেলাম। জিবরাইল (আঃ) সাথে সাথে তাঁর দৃষ্টি দিয়ে দেখলেন এবং বললেন যে দরজাটি এখন খুলল তা আসলে সাধারনত খুলেনা।
বর্ণনাকারী বলেন, সাথে সাথে নবীর কাছে একজন ফেরেশতা এসে বলেন, ''আপনাকে জান্নাতের দুই ধরনের আলোর সুসংবাদ দিতে আসলাম যা অতীতের কোন রাসুলকে দেয়া হয়নি। প্রথমটি হচ্ছে সূরা ফাতিহা এবং পরেরটি সূরা বাকারাহ এর শেষ আয়াত। আপনি যদি এর মধ্য থেকে একটি অক্ষরও পড়েন, আপনি জান্নাতের সেই আলো ভোগ করতে পারবেন। (সহিহ মুসলিম)
৩। আবু সা'ইদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসুল্লুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন সূরা বাকারাহ এর শেষ দুই আয়াত সমগ্র রাতের জন্যেই যথেষ্ট।
মুনাজাত / দোয়া-৮
রাব্বানা লা তুযিঘ কুলুবানা বা-দা ইয হাদায়তানা ওয়া হাব লানা মিল্লাযুনকা রাহমাহ ইন্নাকা আন্তাল ওয়াহাব
সূরা আল-ইমরান, আয়াতঃ ৮
رَبَّنَا لاَ تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنتَ الْوَهَّابُ
মোনাজাতের অর্থ
"হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে তোমার দেখানো পথ থেকে পথভ্রষ্ট হতে দিও না এবং আমাদের ক্ষমা কর। নিশ্চয়ই আপনি দানশীল।"
ফযিলত
হযরত আয়শা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসুল্লুল্লাহ (সাঃ) সকালে ঘুম থেকে উঠেই এই দোয়া করতেন।
মুনাজাত / দোয়া-৯
রাব্বানা ইন্নাকা যামি-উন-নাচি লি-ইয়াওমিল লা রাইবা ফি ইন্নাল্লাহা লা ইউখলিফুল মি-আদ
সূরা আল-ইমরান, আয়াতঃ ৯
رَبَّنَا إِنَّكَ جَامِعُ النَّاسِ لِيَوْمٍ لاَّ رَيْبَ فِيهِ إِنَّ اللّهَ لاَ يُخْلِفُ الْمِيعَادَ
মোনাজাতের অর্থ
"হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আপনি সমস্ত মানবজাতিকে কেয়ামতের দিন একত্র করবেন, এতে কোন প্রকার সন্দেহের অবকাশ নেই। নিশ্চয়ই তুমি ভঙ্গ করোনা অঙ্গীকার!"
ফযিলত
এই আয়াতটির পূর্ববর্তী আয়াত ছিল হাসরের মাঠকে নিয়ে। একই ভাবে এই আয়াতটিও কোন সান্ত্বনা হিসেবে নয়, বরং আখিরাতে জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের জন্যে দোয়াটি করতে হবে।
মুনাজাত / দোয়া-১০
রাব্বানা ইন্নানা আমান্না ফাঘফির লানা যুনুবানা ওয়াকিনা আযাবান-নার
সূরা আল-ইমরান, আয়াতঃ ১
رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
মোনাজাতের অর্থ
"হে আল্লাহ! আমরা ঈমান এনেছি, দয়া করে আমাদের গুনাহ মাফ করে দিন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করুন।"
ফযিলত
যাদের মধ্যে আল্লাহ্ ভীতি আছে, শরিয়তের নীতি-আদর্শের প্রতি সতর্কতার প্রমান স্বরুপ এই দোয়া করা
Tag: ফজরের নামাজের পর মুনাজাত, ফরজ নামাজের পর মুনাজাত করা, namajer por munajat, ফরজ নামাজের পর মুনাজাত, নামাজের মুনাজাত, মুনাজাত দোয়া বাংলা, মোনাজাত ও দোয়া, মোনাজাত দোয়া, মোনাজাত করার দোয়া সমূহ, মুনাজাত, মোনাজাত বাংলায়, মোনাজাতের দোয়াসমূহ, মোনাজাত শেষ করার দোয়া, মোনাজাত, মোনাজাত সমূহ