কুরআনের বৈশিষ্ট্য গুলো | আল কুরআনের বৈশিষ্ট্য | আল কোরআনের বৈশিষ্ট্য | কোরআনের বৈশিষ্ট্য | কুরআন মাজিদের বৈশিষ্ট্য | কুরআনের বৈশিষ্ট্য | quraner boishisto
কুরআনের বৈশিষ্ট্য গুলো | আল কুরআনের বৈশিষ্ট্য | আল কোরআনের বৈশিষ্ট্য | কোরআনের বৈশিষ্ট্য | কুরআন মাজিদের বৈশিষ্ট্য | কুরআনের বৈশিষ্ট্য | quraner boishisto
কুরআনের বৈশিষ্ট্য:
সর্বশেষ আসমানী কিতাব:
কুরআন বিশ্ব মানবতার প্রতি মহান আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ আসমানী কিতাব।এরপর কিয়ামত পর্যন্ত আর কোন ঐশী গ্রন্থ অবতীর্ণ হবে না। এর আগে মানব জাতির হিদায়াতের জন্য তাওরাত, যাবুর, ইনজীল। নামক আরাে বড় তিনটি আসমানী কিতাব এবং ১০০ খানা সহিফা বিভিন্ন নবী-রাসূলের উপর নাযিল হয়েছিল। বর্তমানের তাওরাত, যাবুর ও ইনজীল আসল নয়। আসল কিতাব বিভিন্ন ভাষায় রূপান্তরিত হয়ে ইংরেজি ভাষায় আমাদের কাছে এসে পৌঁছেছে। বিভিন্ন বিপর্যয় এবং ইয়াহুদী-খ্রিষ্টান পাদ্রীদের হাতে ঐসব গ্রন্থের অহীর আসল ভাষা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আল-কুরআনই কিয়ামত পর্যন্ত মানব জাতিকে পথ নির্দেশ করবে।
চিরন্তন গ্রন্থ:
অতীত যুগের সকল আসমানী গ্রন্থই ছিল নির্দিষ্ট কোন, জাতি বা ভৌগােলিক সীমারেখা বেষ্টিত জনগােষ্ঠীর জন্য এবং নির্দিষ্ট সময়ের জন্য হিদায়াতের উৎস। কিন্তু কুরআন মাজীদ কোন নির্দিষ্ট জাতি, গােষ্ঠী, সম্প্রদায়, দেশ বা কালকে কেন্দ্র করে নাযিল হয়নি। বরং এটা সর্বকালের সমগ্র বিশ্বমানবতার জন্য হিদায়াতের বাণী নিয়ে অবতীর্ণ হয়েছে। এটা চিরন্তন ও বিশ্বজনীন গ্রন্থ।
পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা:
কুরআনই ইসলামী জীবন ব্যবস্থা তথা শরীআতের মূলনীতি ও অনুশাসনের উৎস। কুরআনের উপরই ইসলামের সম্পূর্ণ অবকাঠামাে অধিষ্ঠিত। আল্লাহ মানুষকে তাঁর খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। মহাগ্রন্থ আল-কুরআনকে পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা রূপে অবতীর্ণ করা হয়েছে। মানব জাতির বর্তমান ও অনাগত কালের যে সব সমস্যা ও প্রয়ােজন দেখা দেবে, তার সব কিছুরই মূলনীতি কুরআনে বলে দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন- اليوم أكملت لكم دينكم واتممت عليكم نعمتی ویتلر الإسلام دينا “আজ আমি তােমাদে চূড়ান্ত দলিল: র জন্য জীবন ব্যবস্থাকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম। আমার নিয়ামত তােমাদের উপর পরিপূর্ণ করলাম এবং তােমাদের জন্য জীবন ব্যবস্থারূপে ইসলামকে মনােনীত করলাম" । (সূরা মায়িদা : ৩)
চূড়ান্ত দলিল:
ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞান ও ইসলামের নীতি এবং 'আইন-কানুন সংক্রান্ত যে কোন আলােচনায় কুরআনই চূড়ান্ত দলিল হিসেবে গৃহীত। এতেই মানব জাতির ইহকালীন ও পরকালীন জীবনের যাবতীয় বিষয় ও ঘটনাবলির বিবরণ রয়েছে। আল্লাহ তা'আলা বলেন- ها بایرلای هلیورحمة لتويوقنون “এ কুরআন মানব জাতির জন্য সুস্পষ্ট দলিল এবং যারা দৃঢ় বিশ্বাস রাখে তাদের জন্য হেদায়াত ও রহমত।” (সূরা আল-জাসিয়া : ২০) يايها الناس تلجائر برهان من ربكم وانزلنا إليكم نورا مبينا “হে মানব জাতি! তােমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে তােমাদের নিকট চূড়ান্ত প্রমাণ এসেছে এবং আমি তােমাদের জন্য অতি উজ্জ্বল আলােকবর্তিকা অবতীর্ণ করেছি।” (সূরা আন-নিসা : ১৭৪)
সকল আসমানী গ্রন্থের সারসংক্ষেপ:
পূর্ববর্তী নবী-রাসূলগণের দাওয়াত সকল আসমানী কিতাবের সারসংক্ষেপ হলাে এ আল-কুরআন। আল- কুরআন সকল গ্রন্থের কার্যকারিতা রহিত করে দিয়ে মানবজাতিকে মুক্তির সন্ধান দিয়ে চলছে যুগ-যুগ ধরে।
চ্যালেঞ্জের মােকাবিলায় উত্তীর্ণ গ্রন্থ:
কিছু লােক নিজেদের কুসংস্কার ও জিদের বশবর্তী হয়ে একে মানুষের রচনা বলে অপবাদ রটনা করে। একে কবিতা, যাদু কথা ইত্যাদি বলে উপহাস করে। এতে আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে এবং অনাগত কাল পর্যন্ত যাদের মনে এমন ধারণা জন্ম দেবে তাদের লক্ষ্য করে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, এটা যদি সত্যিই কোন মানুষের রচনা হয়ে থাকে, তাহলে তােমরা অনুরূপ বাক্য রচনা করে দেখাও। কুরআনের এটা একটি বড় মুজিযা ও বৈশিষ্ট্য যে, কোন মানুষই প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত কুরআনের অনুরূপ বাক্য রচনা করতে পারেনি। কিয়ামত পর্যন্ত কোন মানুষ বা জিন তা পারবেও না। সমগ্র বিশ্ববাসীর কাছে কুরআনের এ চ্যালেঞ্জ বিগত দেড় হাজার বছর ধরে ছুড়ে দেয়া আছে। যুগে যুগে বহু মানুষ বিশেষ করে ইসলাম বিরােধী মহল এমনকি ইয়াহুদী খ্রিষ্টান জগৎ এ বিজ্ঞানের যুগেও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এ চিরন্তন চ্যালেঞ্জের মােকাবিলায় কেউ সফল হয়নি। কুরআন বিরােধী সর্বাত্মক চেষ্টা করেও ব্যর্থতার গ্লানি আনত শিরে স্বীকার করে নিজেদের অপারগতা প্রকাশ করে অকুণ্ঠ চিত্তে তারা বলতে বাধ্য হয়েছে-ليس هذا من كلام البشير “না, এটা কোন মানুষের বাণী নয়।"
অতীব নির্ভুল গ্রন্থ:
পূর্ববর্তী উম্মতগণ তাদের প্রতি প্রেরিত 'আসমানী গ্রন্থ এবং তাদের নবীর শিক্ষা নিজেদের সুবিধামত পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও সংযােজন-বিয়ােজন করে। কুরআনই এমন এক গ্রন্থ, যা যাবতীয় বিকৃতির অভিশাপ হতে চিরমুক্ত। কুরআন বলছে- ذلك الكتب لأريب فيه “এটা সেই কিতাব; এতে কোন সন্দেহ নেই।” (সূরা আল-বাক্বারা : ২)
কুরআনের ভাষা ও গুণগত মান:
আল-কুরআন অতুলনীয় অনুপম এক গ্রন্থ। আল-কুরআনের ভাব-ভাষা, অলংকার, উপমা, ছন্দ-মূৰ্ছনা, রচনাশৈলী, বিষয়বস্তুর অভিনব গ্রন্থনা, বাক্যের অনুপম বিন্যাস, শাব্দিক দ্যোতনা সব মিলেই এক অভাবনীয় সাহিত্য। এজন্য এ গ্রন্থখানি মহানবী (স)-এর চিরন্তন মু'জ্যিপূর্ণ এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী গ্রন্থ।
বিষয়বস্তুর ব্যাপকতা:
আল-কুরআন কাঠামােগতভাবে সংক্ষিপ্ত পরিসরে হলেও এর বক্তব্য ও বিষয়বস্তুর ব্যাপকতা সুগভীর। কুরআনের এ কলেবরে লুক্কায়িত রয়েছে কোটি সাগরের বিশালতা। প্রতিটা শব্দ-বাক্য ও বক্তব্য এতই ব্যাপক যে, তার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করতে সহস্র সহস্র পৃষ্ঠা সম্বলিত তাফসীর গ্রন্থের সৃষ্টি হয়েছে।
জীবন সমস্যার সমাধান:
এ মহান গ্রন্থে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক, রাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক, আদালতসহ সর্বস্তরে পেশ করেছে নিখুঁত ও শাশ্বত শান্তির সুস্পষ্ট সমাধান । মহানবী (স) এ প্রসঙ্গে বলেছেন- "আল-কুরআন আল্লাহর রশি, আল্লাহর অত্যুজ্জ্বল নূর ও অব্যর্থ মহৌষধ। যে ব্যক্তি সাদরে-সযত্নে কুরআনকে আঁকড়ে ধরবে, সে পাবে মুক্তির আবে-হায়াত, আর সে কখনাে ধ্বংস হবে না।" (বায়হাকী)