দোয়া কবুল হওয়ার উপায় | দোয়া কবুল হওয়ার আমল | dua kobul howar amol

কি করলে দোয়া কবুল হয় |দোয়া কবুল হওয়ার উপায় | দোয়া কবুল হওয়ার আমল | dua kobul howar amol

দোয়া কবুল হওয়ার উপায় | দোয়া কবুল হওয়ার আমল | dua kobul howar amol

দুনিয়া বা আখিরাতের কোন চাওয়া যখন আমার কাছে জরুরী মনে হয় তখন রাসুল (সাঃ)-এর শেখানো কিছু কৌশল অবলম্বন করি এতেই আল্লাহ সুবহানাহু তা’লা আমার ফরিয়াদ শুনেন বলে প্রমান পাই অন্তত দুনিয়াবি বিষয়ে আর আখিরাতের ফলাফল তো আমরা মিলিয়ে দেখতে পারবো পরকালে ইন শা আল্লাহ যখন আমাদের প্রতিফল দেওয়া হবে, কিছু কৌশল সবার সাথে শেয়ার করছি ইনশাআল্লাহ।


(১) একজন সামান্য মানুষের কাছে ৫-৭বার চাইলে সেও না বলতে লজ্জা পায় আর আমার মহান রব যিনি সবচেয়ে বড় দাতা তার কাছে চাইবো আর তিনি ফিরিয়ে দিবেন এটা হতে পারে না এমন বিশ্বাস রেখে দোয়া চালিয়ে যাওয়া-  নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমার বান্দা আমার প্রতি যেমন ধারণা করে আমি তেমন।”(সহিহ বুখারী- ৭৪০৫, সহিহ মুসলিম- ৪৬৭৫)  আবু হুরায়রা (রাঃ) এর হাদিসে এসেছে, “তোমরা দোয়া কবুল হওয়ার দৃঢ় বিশ্বাস (একীন) নিয়ে আল্লাহ্‌র কাছে দোয়া কর।”(সুনানে তিরমিযি, আলাবানী সহিহুল জামে গ্রন্থে- ২৪৫ হাদিসটিকে ‘হাসান’ আখ্যায়িত করেছেন) তাই যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র প্রতি ভাল ধারণা পোষণ করে আল্লাহ্‌ তার উপর প্রভুত কল্যাণ ঢেলে দেন, তাকে উত্তম অনুগ্রহে ভূষিত করেন, উত্তম অনুকম্পা ও দান তার উপর ছড়িয়ে দেন।


(২) আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে দোয়া করা-
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : আযান ও ইকামাতের মধ্যবর্তী সময়ে দুআ ফেরত দেয়া হয় না। সুতরাং তোমরা দুআ কর। (তিরমিজী ও আহমদ) অর্থাৎ আজান হওয়ার পড় মসজিদে সলাত আরম্ভ হওয়ার আগ পর্যন্ত। 

(৩) রাতের শেষ তৃতীয়াংশে দোয়া করা-
প্রতিটি রাতের শেষ তৃতীয়াংশেই দোয়া কবুল করা হয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক দিন রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আল্লাহ তায়ালা সবচেয়ে নিচের আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আমাকে ডাকছো, আমি তোমার ডাকে সাড়া দেবো। কে আমার কাছে চাইছো, আমি তাকে তা দেবো। কে আছো আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনাকারী, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। (মুসলিম)

(৪) সিয়াম রেখে দোয়া করা, পিতামাতার কাছে দোয়া চাওয়া, কোথাও সফরে গেলে মুসাফির অবস্থায় দোয়া করা বা কোন মুসাফির থেকে দোয়া চাওয়া-  রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, “তিনটি দোয়া (আল্লাহর কাছ থেকে) ফিরিয়ে দেয়া হয়না। সন্তানের জন্য পিতামাতার দোয়া, রোজাদার ব্যক্তির দোয়া, মুসাফিরের দোয়া”। (বায়হাকি, তিরমিজি)

(৫) অনুপস্থিত মুসলিম ভাই বা বোনের জন্য অন্তর থেকে দোয়া করা বা তাদের থেকে দোয়া চাওয়া- রাসুল (সাঃ) বলেন- কোন মুসলিম অপর মুসলিমের জন্য খাছ মনে দুয়া করলে দুয়া কবুল হয়। সেখানে একজন ফিরিশতা নিযুক্ত থাকেন। যখনই ঐ ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের জন্য দুয়া করে তক্ষণই ঐ ফিরিশতা “আমীন” “আমীন” বলেন। এবং বলেন- তোমার জন্যও অনুরূপ হোক। (মুসলিম, মিশকাতঃ ২২২৮, দোয়া অধ্যায়, অধ্যায়-৯) সুতরাং দেখা যাচ্ছে আপনি অন্য মুসলিম ভাইয়ের জন্য যা যা দোয়া করবেন আপনাকেও আল্লাহ সুবহানাহু তা’লা তাই তাই দিবেন ইন শা আল্লাহ কিংবা আপনার অনুপস্থিতিতে কেও আপনার জন্য দোয়া করলে সেই দোয়া কবুল করে নেওয়া হবে।

(৬) দুই হাত তুলে চাওয়া-
রাসুল (সাঃ) বলেন- আল্লাহ্‌ খুব লজ্জাশীল, তোমাদের মধ্য থেকে কেউ যখন আল্লাহর নিকট দু হাত তুলে কিছু চায়। তখন সেটা যদি তার জন্য কল্যাণকর হয় তবে আল্লাহ্‌ তা তাকে দেন, আর যদি তা তার জন্য কল্যাণকর না হয় তবে আল্লাহ্‌ তাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিতে লজ্জা পান, ফলে তাকে কিছু না কিছু দিয়েই থাকেন। (আবু দাউদ) তাই বুঝা গেল হাত তুলে দুয়া করা অতি লাভজনক, হাত তুলে দুয়া করলে কিছু না কিছু পাওয়া যাবেই। এটা দিনে রাতে যে কোন সময় করা যাবে, হাদিসে কোন সময়কে নির্ধারিত করে দেওয়া হয়নি আবার সবার সাথে সম্মিলিতভাবেও করতে বলা হয়নি তাই যে কোন সময় একাকি হাত তুলে নিজের চাওয়াটা আল্লাহর কাছে চেয়ে নিবেন।

(৭) সেজদায় গিয়ে চাওয়া-
রাসুল (সাঃ) বলেন- সিজদার সময় বান্দা তার রবের সর্বাধিক নিকটে পৌঁছে যায়। অতএব ঐ সময় তোমরা সাধ্যমত বেশি বেশি দুয়া কর। (মুসলিম, মিশকাতঃ ৮৯৪,অনুচ্ছেদ-১৪) (যে জিনিষটা আপনার চাওয়া প্রয়োজন তা যদি আরবিতে চাইতে পারেন তাহলে সিজদার তাসবিহ পড়ার পর আরবিতে চাওয়াই উত্তম আর আরবিতে না পারলে সিজদার তাসবিহ পড়ার পর নিজের ভাষাতেও চাইতে পারবেন মর্মে উলামাদের ফতওয়া রয়েছে তাই কোন সমস্যা নেই ইন শা আল্লাহ) 

(৮) ইসমে আজমসহ দো‘আ করা-
اَللَّهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ بِأَنَّكَ أَنْتَ اللهُ الْأَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِيْ لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُوْلَدْ وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা বিআন্নাকা আনতাল্লা-হুল আহাদুছ ছামাদুল্লাযী লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ ওয়া লাম ইয়াকুল লাহূ কুফুওয়ান আহাদ’  (হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকটে প্রার্থনা করছি; কেননা তুমি আল্লাহ। তুমি একক ও মুখাপেক্ষীহীন। যিনি কাউকে জন্ম দেননি ও যিনি কারো থেকে জন্মিত নন এবং যাঁর সমতুল্য কেউ নেই)। জনৈক ব্যক্তিকে এটা পড়তে শুনে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ঐ ব্যক্তি আল্লাহর নিকটে তাঁর ‘ইসমে আযম’ (মহান নাম) সহ দো‘আ করেছে। যে ব্যক্তি উক্ত নাম সহকারে প্রার্থনা করবে, তাকে তা দেওয়া হবে। আর যখন এর মাধ্যমে দো‘আ করা হবে, তা কবুল করা হবে’। (ইবনু মাজাহ হা/৩৮৫৭ ‘দো‘আ’ অধ্যায়-৩৪, ‘আল্লাহর ইসমে আযম’ অনুচ্ছেদ-৯; আবুদাঊদ হা/১৪৯৩; ‘আওনুল মা‘বূদ হা/১৪৮২-এর ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য) অর্থাৎ এই দোয়া পড়ার পর নিজের চাহিদা আল্লাহর কাছে জানাবে এতে আল্লাহ সুবহানাহু তা'লা তার দোয়া কবুল করে নিবেন ইন শা আল্লাহ।

আমরা দুনিয়াবি কোন কাজ কর্মে সফল হওয়ার জন্য যত উপায় উপকরন থাকে প্রায় সবটাই কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। এক্ষেত্রেও যদি আমরা সব রকমের চেষ্টা প্রচেষ্টা কাজে লাগাই আর হাল ছেড়ে না দিই তবে আশা করা যায় আল্লাহ সুবহানাহু তা’লা আমাদের দুনিয়া আখিরাতের সব দোয়াই কবুল করে নিবেন ইন শা আল্লাহ আর হাল ছেড়ে  দিলে কিন্তু আল্লাহ সুবহানু তা’লা দোয়া কবুল করেন না  রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “বান্দার দোয়া সর্বদা কবুল করা হয়, যদি সে দোয়াতে পাপ অথবা আত্মীয়তার সম্পর্কের ছিন্ন করার কথা না বলে এবং তাড়াহুড়ো না করে। জিজ্ঞেস করা হল হে আল্লাহর রাসুল! তাড়াহুড়ো বলতে কি বুঝায়? তিনি বললেন, দুয়াতে তাড়াহুড়া হল, প্রার্থনাকারী বলে আমিতো দোয়া করলাম কিন্তু কবুল হতে দেখলাম না। ফলে সে নিরাশ হয় ও ক্লান্ত হয়ে দোয়া করা ছেড়ে দেয়।” (সহীহ মুসলিম)

Tag: দোয়া কবুল হওয়ার কারণ, দোয়া কবুল হওয়ার কারণ কি, দোয়া কবুল হওয়ার কারণ সমূহ,  dua kobul howar karon, কি কি কারণে দোয়া কবুল হয়, দোয়া কবুল হওয়ার উপায়, দোয়া কবুল হওয়ার আমল, dua kobul howar amol
Next Post Previous Post